[go: up one dir, main page]

বিষয়বস্তুতে চলুন

উইকিশৈশব:সৌরজগৎ/ভূমিকা

উইকিবই থেকে
সৌরজগৎ

ভূমিকা
আমাদের সৌরজগৎ
সূর্য
বুধ
শুক্র
পৃথিবী
চাঁদ
মঙ্গল
গ্রহাণুপুঞ্জ
বৃহস্পতি
শনি
ইউরেনাস
নেপচুন
প্লুটো
ধূমকেতু
কুইপার বেষ্টনী
উর্ট মেঘ
পরিভাষাকোষ
পরীক্ষা

ভূমিকা

[সম্পাদনা]
রাতের আকাশে এই গ্রহগুলিকে ছোট্ট ছোট্ট বিন্দুর মতো দেখায়। কিন্তু এগুলিকে যদি বিন্দু বলো, তাহলে পৃথিবী (ছবিতে মার্বেলের গুলির আকারের গ্রহগুলির মধ্যে উপরে বাঁদিকে) বালির একটি দানার চেয়েও ছোটো।

উইকিশৈশবে ছোটোদের জন্য লেখা সৌরজগৎ বইটিতে তোমাদের স্বাগত জানাই। মহাকাশ সম্ভবত মানবজাতির শেষ সীমান্ত। সৌরজগতের বেশিরভাগ বস্তুকে পৃথিবীর মাটি থেকে ছোটো ছোটো বিন্দুর মতো দেখায়। তবুও আমাদের ওই মহাজাগতিক প্রতিবেশীদের ব্যাপারে জেনে রাখাটা খুবই দরকার। যদি বড়ো হয়ে তুমি একজন মহাকাশচারী হয়ে মহাশূন্যে বেড়াতে যাও, তাহলে তো তোমাকে সৌরজগৎ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে হবে। সেখানে যাঁরা যান, তাঁদের কাজকর্ম আমাদের উপর প্রভাব ফেলে। তাই তুমি যদি সেখানে নাও যাও, তাহলেও মহাকাশ সম্পর্কে তোমাকে জেনে রাখতেই হবে। তাছাড়া যদি তোমার সঙ্গে কোনও জ্যোতির্বিজ্ঞানী বা মহাকাশচারীর দেখা হয়ে যায়, তবে তার সামনে দাঁড়িয়ে তো আর তুমি বোকার মতো কথা বলতে চাইবে না! তাই সৌরজগৎ সম্পর্কে জেনে রাখার গুরুত্ব কতটা, তা উপলব্ধি করে এখানে এই উইকিশৈশবে অনেক বিশেষজ্ঞ নিজেদের সময় ও প্রতিভার সদ্‌ব্যবহার করে এই বইটি প্রস্তুত করেছেন।

উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রকল্প এই উইকিবই। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল সারা বিশ্বে জ্ঞানের প্রসারের জন্য ছোটো বড়ো সবার উপযোগী উচ্চমানের সহজলভ্য পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে সরবরাহ করা। বইপাড়ার নামী প্রকাশনা সংস্থাগুলি ধ্রুপদি বইগুলি নতুন করে ছেপে অথবা সুপ্রতিষ্ঠিত লেখক বা স্বনামধন্য সেলিব্রিটিদের নতুন বই প্রকাশ করে মুনাফা অর্জন করে। কিন্তু ব্যবসার এই প্রথাগত কাঠামোটি উল্টে গিয়ে যখন ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে নতুন প্রতিভারা উঠে আসেন, তখন শুধুমাত্র মেধার ভিত্তিতে লেখা সত্যিকারের ভালো নতুন বই প্রকাশিত হওয়ার সুযোগ অনেকটাই বেড়ে যায়।

এই প্রকল্পটির মাধ্যমে আমরা পৌছে গিয়েছি গতকালের বইপত্র এবং আগামীকালের জন্য লেখা সব পেয়েছির বিশ্বকোষের এক মোড়ের মাথায়। শুধুমাত্র এই বইটি পড়েই এবং অন্যদের এই বইটির কথা জানিয়েই, তুমি তথ্যের মুক্ত উৎসের দিকে এবং প্রকাশনা জগতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কাজে এক ধাপ এগিয়ে যাবে।

ধন্যবাদ।

আর শেষে আরেকবার স্বাগত জানাই।

সৌরজগৎ আবিষ্কার

[সম্পাদনা]
পৃথিবীকে ঘিরে স্পুটনিকের পরিকল্পিত কক্ষপথ; সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি ডাকটিকিটে মুদ্রিত ছবি।

বিজ্ঞানীরা এখনও মহাবিশ্বকে আবিষ্কার করে চলেছেন। গাছপালা বা জন্তু-জানোয়ারের মতো ছোটো ছোটো জিনিস থেকে শুরু করে সৌরজগৎ বা ছায়াপথের মতো বিরাট বিষয়ের অনেক কিছুই এখনও বিজ্ঞানীদের গোচরে আসেনি।

যে সব বিজ্ঞানীরা মহাকাশ নিয়ে গবেষণা করেন, তাঁদের জ্যোতির্বিজ্ঞানী বা জ্যোতির্পদার্থবিদ বলা হয়। তারা দু’টি পদ্ধতি অবলম্বন করে সৌরজগৎ চর্চা করেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা টেলিস্কোপের মাধ্যমে মহাজাগতিক বস্তু বা ঘটনাগুলিকে পর্যবেক্ষণ করেন। অন্যদিকে জ্যোতির্পদার্থবিদেরা (জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি বিশেষজ্ঞ শ্রেণি) পদার্থবিদ্যার সূত্র অবলম্বন করে পর্যবেক্ষণ করা সেই সব বস্তু বা ঘটনাগুলি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন এবং যা এখনও দেখা যায়নি বা জানা যায়নি, তার ব্যাপারে নতুন নতুন তত্ত্ব উপস্থাপনা করেন।

ইউরোপে ১৭শ শতাব্দীর গোড়ার দিকে আবিষ্কৃত হয় টেলিস্কোপ। তারপর গ্যালিলিও গ্যালিলির মতো কৌতুহলী বিজ্ঞানীরা খুব দূরের বস্তু খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়ে যান। এই টেলিস্কোপের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা সৌরজগৎ ও মহাবিশ্বের এমন অনেক জিনিস দেখতে পান, যা তার আগে কেউ কোনওদিন দেখেনি। গ্যালিলিও তার দূরবীনের সাহায্যে শনিকে ঘিরে থাকা বলয়গুলিকে দেখতে পান এবং চাঁদের অনুপুঙ্খ ছবি আঁকেন। বৃহস্পতির সবচেয়ে বড়ো চারটি উপগ্রহকেও (যেগুলিকে এখন গ্যালিলিও চাঁদ বলা হয়) দেখেছিলেন। আর দেখতে পেয়েছিলেন সূর্যের কলঙ্কগুলি। পৃথিবী ও মহাশূন্যে স্থাপিত টেলিস্কোপগুলি এখনও সৌরজগৎ আবিষ্কার করে চলেছে। টেলিস্কোপ বেশ কয়েক ধরনের হয়। সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় অপটিক্যাল টেলিস্কোপ বা আলোক দূরবীন ও রেডিও দূরবীন। "অপটিক্যাল" বলতে আলোকসম্বন্ধীয় বোঝায়। আলোর প্রতিফলন ধরার মাধ্যমেই এই দূরবীন কাজ করে। গ্যালিলিওর দূরবীন এই ধরনেরই ছিল। রেডিও দূরবীন মহাকাশ থেকে আগত রেডিও তরঙ্গগুলি ধরে। রেডিও তরঙ্গ প্রাকৃতিকভাবেই সৃষ্টি হয়। মানুষকেই যে এই তরঙ্গ সৃষ্টি করতে হবে, তার কোনও মানে নেই।

মহাশূন্যে স্থাপিত হাবল স্পেস টেলিস্কোপ।

১৯৫০-এর দশকের আগে পর্যন্ত মানুষ পৃথিবীর মাটিতে দাঁড়িয়েই সৌরজগৎ পর্যবেক্ষণ করে এসেছিল। ১৯৫৭ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন (এই দেশটি এখন রাশিয়া ও অন্যান্য অনেকগুলি দেশে বিভাজিত হয়ে গিয়েছে) মহাকাশে প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপন করে। এই উপগ্রহটির নাম ছিল স্পুটনিক ১ (উচ্চারণ স্পূ-ট্‌নীক)। সেই সময় থেকে মানুষ সৌরজগৎ আবিষ্কারের জন্য মহাকাশযান উৎক্ষেপন করে আসছে। এই সব যানের কোনও কোনওটিকে মানুষ নিজে মহাকাশে নিয়ে গিয়েছে, কোনওটিকে আবার পৃথিবীর মাটিতে দাঁড়িয়েই মানুষ মহাকাশে চালনা করেছে।

এখন মানুষের তৈরি করা মহাকাশযানগুলি সৌরজগতের দিকে দিকে গ্রহ-উপগ্রহগুলিকে পর্যবেক্ষণ করে চলেছে। সেই সব মহাকাশযান তথ্য সংগ্রহ করে পৃথিবীতে পাঠাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে সেই সব তথ্য ব্যাখ্যা করছেন। প্রতি বছরই তারা সৌরজগৎ সম্পর্কে নতুন কিছু জানতে পারছেন। মাঝে মাঝে অন্য জগৎ সম্পর্কে তারা এমন কিছু জানতে পারছেন যা আমাদের এই পৃথিবীকেই মনে করিয়ে দেয়।তাছাড়া আরও অনেক কিছুই তারা জানতে পারছেন, যা খুবই অদ্ভুত। তারা যা জানছেন, তা দিয়ে এই পৃথিবী, পৃথিবীর ইতিহাস ও পৃথিবীর চারপাশ সম্পর্কে আমার জ্ঞান আরও পরিপুষ্ট হচ্ছে।

কিভাবে সৌরজগৎ মাপা হয়?

[সম্পাদনা]

কোনও বস্তু কত বড়ো, কতটা গরম বা ঠান্ডা, এবং কত দূরে আছে, তা মাপার জন্য একটি পরিমাপ পদ্ধতি বিজ্ঞানীদের কাছে খুব দরকারি এক বিষয়। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে আমরা মেট্রিক পদ্ধতি প্রয়োগ করে থাকি। এই পদ্ধতির নামকরণ করা হয়েছে মূল একক মিটারের নাম অনুসারে। এই বইটিতে যত ধরনের পরিমাপ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে, তার একটি বিবরণ নিচে দেওয়া হল।

দূরত্ব বা দৈর্ঘ্য/প্রস্থ

[সম্পাদনা]

পরবর্তী অধ্যায়: সৌরজগৎ