জাগরেব
জাগরেব | |
---|---|
নগরী | |
গ্রাদ জাগরেব জাগরেব শহর | |
ঘড়ির কাঁটার দিকে, উপর থেকে: বান জেলাসিক স্কয়ার, সাধু মার্কের চত্বর, ক্রোয়েশীয় রাষ্ট্রীয় মহাফেজখানা, জাগরেবের ট্রামগাড়ি, শিল্পকলা প্রদর্শনী ভবন, সিবোনা এবং এইচওটিও টাওয়ার এবং জাগরেব | |
ক্রোয়েশিয়াতে জাগরেবের ভৌগোলিক অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ৪৫°৪৯′ উত্তর ১৫°৫৯′ পূর্ব / ৪৫.৮১৭° উত্তর ১৫.৯৮৩° পূর্ব | |
দেশ | ক্রোয়েশিয়া |
দেশ | City of Zagreb |
RC diocese | ১০৯৪ |
Free royal city | ১২৪২ |
Unified | 1850 |
Subdivisions | ১৭ city districts 218 local committees (70 settlements) |
সরকার | |
• ধরন | Mayor-Council |
• Mayor | Milan Bandić (BM 365) |
• City Assembly | 51 members |
আয়তন[১] | |
• নগরী | ৬৪১ বর্গকিমি (২৪৭ বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা | ২০২.৪ বর্গকিমি (৭৮.১ বর্গমাইল) |
• মহানগর | ৩,৭১৯ বর্গকিমি (১,৪৩৬ বর্গমাইল) |
উচ্চতা[২] | ১৫৮ মিটার (৫১৮ ফুট) |
সর্বোচ্চ উচ্চতা | ১,০৩৫ মিটার (৩,৩৯৬ ফুট) |
সর্বনিন্ম উচ্চতা | ১২২ মিটার (৪০০ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১৮ জনগণনা)[৩] | |
• নগরী | ৮,০২,৫৮৮ |
• আনুমানিক (২০১৮)[৪] | ৮,২০,৪৩৩ |
• জনঘনত্ব | ৪,০৫৫/বর্গকিমি (১০,৫০০/বর্গমাইল) |
• মহানগর | ১২,২৮,৯৪১ |
• মহানগর জনঘনত্ব | ৩৩০/বর্গকিমি (৮৬০/বর্গমাইল) |
বিশেষণ | Zagrepčanin (cr) Zagreber (en) |
সময় অঞ্চল | CET (ইউটিসি+1) |
• গ্রীষ্মকালীন (দিসস) | CEST (ইউটিসি+2) |
Postal code | HR-10 000, HR-10 010, HR-10 020, HR-10 040, HR-10 090 |
Area code | +385 1 |
যানবাহন নিবন্ধন | ZG |
GDP (PPP) | 2017 |
- Total | $25 billion / €22.7 billion |
- Per capita | $32,404 / €28,237 |
HDI (2017) | 0.890[৫] – very high |
ওয়েবসাইট | zagreb |
জাগরেব (ক্রোয়েশীয় উচ্চারণ: [zǎːɡreb] () দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের রাষ্ট্র ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী নগরী। এটি ক্রোয়েশিয়ার বৃহত্তম নগরী ও দেশটির সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু। এটি ক্রোয়েশিয়ার উত্তর-পশ্চিম ভাগে, মেদভেদনিকা পর্বতমালার দক্ষিণ ঢালে, সমুদ্রতল থেকে আনুমানিক ১২২ মিটার উচ্চতায়, সাভা নদীর বন্যাপ্লাবিত অববাহিকা অঞ্চলে অবস্থিত। পর্বতগুলির উত্তরে জাগোরিয়ে নামক অরণ্য, আঙুরের ক্ষেত, গ্রাম ও প্রাচীন দুর্গবিশিষ্ট অঞ্চলটি অবস্থিত। জাগরেব নগরীটির জলবায়ু গ্রীষ্মকালে তপ্ত ও শীতকালে শীতল প্রকৃতির। ২০১৮ সালে মূল নগরীটির প্রাক্কলিত জনসংখ্যা ছিল ৮ লক্ষের সামান্য বেশি। )[৬] বৃহত্তর জাগরেব পৌরপিণ্ড এলাকার জনসংখ্যা ১০ লক্ষ ৮৬ হাজারের কিছু বেশি,[৭] যা ক্রোয়েশিয়ার সমগ্র জনসংখ্যার আনুমানিক এক-চতুর্থাংশ।
জাগরেব ক্রোয়েশিয়ার শিল্প ও বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র। এখানকার শিল্পকারখানাগুলিতে ভারী যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক, ধাতব ও রাসায়নিক দ্রব্যাদি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য, কাগজের দ্রব্য, জুতা ও চামড়াজাত দ্রব্য, বস্ত্র ও পোশাক প্রস্তুত করা হয়। নগরীটি পশ্চিম ও কেন্দ্রীয় ইউরোপ থেকে আড্রিয়াটিক সাগর ও বলকান উপদ্বীপ অঞ্চলে গমনকারী মহাসড়ক ও রেলপথগুলির একটি সংযোগস্থলে দাঁড়িয়ে আছে। এখানে প্রতি বছর একটি বাণিজ্যমেলার আয়োজন করা হয়।
জাগরেব আধুনিক ক্রোয়েশিয়ার সংস্কৃতির হৃৎকেন্দ্র। এখানে ক্রোয়েশিয়ার বিজ্ঞান ও শিল্পকলা অ্যাকাডেমি (প্রাক্তন যুগোস্লাভ বিজ্ঞান ও শিল্পকলা অ্যাকাডেমি) এবং ১৬৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জাগরেব বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত। এছাড়া এখানে একাধিক শিল্পকলা প্রদর্শনীকেন্দ্র, গীতিনাট্যশালা, ইতিহাস ও বিজ্ঞান জাদুঘর, এবং শিল্পকলা, নাট্য ও সঙ্গীত অ্যাকাডেমি অবস্থিত। বহুকাল ধরে বিদেশী শাসনের অধীনে থাকা সত্ত্বেও জাগরেবের ঐতিহাসিক স্থাপত্য আজও অটুট। এখানে এখনও বহু মধ্যযুগীয় ভবন, ১৮শ শতকে নির্মিত একটি প্রাসাদ ও ১১শ শতকে নির্মিত ঐতিহাসিক একটি মহাগির্জা দাঁড়িয়ে আছে। গোথিক শৈলীতে নির্মিত সাধু মার্কের মহাগির্জা বা ক্যাথেড্রাল, ১৫শ শতকে নির্মিত ও সৌষ্ঠব ভঙ্গিতে উদীয়মান গির্জাশিখর সংবলিত সাধু স্টিভেনের মহাগির্জা এবং পুরাতন মহাশিল্পীদের অনেকগুলি চিত্রকর্ম সংবলিত স্ট্রসমায়ার চিত্রশালাটি উল্লেখ্য। নগরকেন্দ্র থেকে উত্তর দিকে পুরাতন গ্রাদেক ও কাপতোল শহরগুলির দিকে দুইটি প্রশস্ত সবুজ বেষ্টনী চলে গিয়েছে, এবং এগুলিতে বহুসংখ্যক জাদুঘর, চিত্রশালা ও প্রশস্ত চত্বর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
জাগরেব এখন যে এলাকায় অবস্থিত, সেখানে স্লাভীয় গোত্রের লোকেরা খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ শতকে বসতি স্থাপন করেছিল। ১০৯৩ সালে একই এলাকায় একটি রোমান ক্যাথলিক ধর্মপ্রদেশের কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যাকে কেন্দ্র করে অপর একটি বসতি গড়ে ওঠে, যার নাম ছিল কাপ্তোল। মধ্যযুগে বহু শতাব্দী ধরে এই দুইটি নাগরিক ও ধর্মীয় বা যাজকীয় শহর সহাবস্থান করে ছিল এবং তারা ক্রোয়েশিয়ার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গঠন করেছিল। ১০ম শতকে নাগরিক শহরটিকে ক্রোয়েশিয়া রাজতন্ত্রের রাজধানী বানানো হয়। ১১শ শতকের শেষভাগে এসে এই শহর দুইটি হাঙ্গেরির নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। ১২৪২ সালে নাগরিক শহরটি একটি হাঙ্গেরীয় মুক্ত রাজকীয় নগরীর মর্যাদা লাভ করে। এটি একটি স্বশাসিত সামন্ততান্ত্রিক লোকালয়ে পরিণত হয়। ১৩শ শতকে তুর্কিদের আক্রমণ থেকে প্রতিরক্ষার জন্য নাগরিক শহরটির চারপাশে প্রাচীর নির্মাণ করা হয় এবং এর নাম হয় গ্রাদেক, অর্থাৎ "দুর্গশহর"। ১৬শ শতকে ধর্মীয় কাপ্তোল শহরটিকেও দুর্গ দিয়ে প্রতিরক্ষা প্রদান করা হয়। ৩০০ বছর ধরে সম্প্রসারিত হতে হতে ১৯শ শতকে এসে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই লোকালয় শেষ পর্যন্ত একত্রিত হয় এবং নতুন নতুন ভবন নির্মাণ হয় ও দক্ষিণদিকে সাভা নদীর বন্যাপ্লাবিত সমভূমিতে এটি সম্প্রসারিত হতে শুরু করে। নতুন এই শহরে অনেক উন্মুক্ত চত্ত্বর ও নগর উদ্যান নির্মাণ করা হয়। ১৭শ শতক থেকেই অনানুষ্ঠিকভাবে এই পৌর অঞ্চলটিকে "জাগরেব" নামে ডাকা শুরু হয়। ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে এসে প্রশাসনিকভাবে গ্রাদেক ও কাপ্তোলকে একত্রিত করে "জাগরেব" (এবং জার্মান ভাষায় "আগ্রাম") নাম দেওয়া হয়। ১৮৬৭ সালে জাগরেব নগরীকে হাঙ্গেরির অধীনস্থ ক্রোয়েশিয়া ও স্লাভোনিয়া রাজ্যের রাজধানী বানানো হয়। ১৯শ শতকে ক্রোয়েশীয় জাতীয়তাবাদের পুনরুত্থানের সময় জাগরেব একই সাথে ক্রোয়েশিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলন ও একটি সর্ব-যুগোস্লাভীয় আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল। ২০শ শতকের শুরুতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ১৯১৮ সালে ক্রোয়েশিয়া অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্য থেকে মুক্ত হয়ে যায় এবং একীভূত সার্বীয়, ক্রোয়েশীয় ও স্লোভেনীয় রাজ্যের একটি অংশে পরিণত হয়, যা পরবর্তীতে ১৯২৯ সালে নাম বদলে যুগোস্লাভিয়া নামক দেশে পরিণত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির শাসনাধীনে জাগরেব একটি অধীনস্থ ক্রোয়েশীয় রাজ্যের রাজধানীতে পরিণত হয়। ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জাগরেব অক্ষশক্তির অধীনস্থ পুতুলরাষ্ট্র ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী ছিল। ১৯৪৫ সালের মে মাসে মার্শাল টিটো নগরীটিকে জার্মানদের হাত থেকে মুক্ত করেন এবং ২য় বিশ্বযুদ্ধের পরে ১৯৪৫ সালে ক্রোয়েশীয় রাজ্যটি যুগোস্লাভীয় ক্রোয়েশিয়া প্রজাতন্ত্র হিসেবে পুনরায় যুগোস্লাভিয়াতে যোগ দেয়। ১৯৯১ সালে ক্রোয়েশিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করে যুগোস্লাভিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং জাগরেব এই নতুন রাষ্ট্রের রাজধানীতে পরিণত হয়। কিন্তু এর পর দেশটির বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, তাতে জাগরেব নগরীর ব্যাপক ক্ষতি হয়। ১৯৯৫ সালে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি পরে নগরীটিকে আবার নতুন করে গড়ে তোলা হয়।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]ক্রোয়েশিয়া সাম্রাজ্য (১৫২৭-১৯১৮)
[সম্পাদনা]ক্রোয়েশিয়া সাম্রাজ্য-এ এই শহর ছিল রাজ্যের রাজধানী।
১৯৪১-বর্তমান
[সম্পাদনা]নাৎজি জার্মানি সমর্থিত স্বাধীন ক্রোয়েশিয়া রাষ্ট্র-এ এই শহর ছিল রাজ্যের রাজধানী। পরবর্তীতে যুগোস্লাভিয়ার অন্তর্গত সমাজতান্ত্রিক ক্রোয়েশিয়ার কেন্দ্র হয় এই শহর।
জলবায়ু
[সম্পাদনা]জাগরেব এর জলবায়ু মহাসাগরীয় যা আর্দ্র মহাদেশীয় জলবায়ু অঞ্চলের সীমার কাছাকাছি। এখানে চারটি পৃথক ঋতু আছে। গ্রীষ্মকালে গরম হয়, এবং শীতকালে একটি আপাত শুষ্ক ঋতু ছাড়া ঠান্ডা। শীতকালীন গড় তাপমাত্রা -০.৫ ° সেলসিয়াস (৩১.১ ডিগ্রি ফারেনহাইট) এবং গ্রীষ্মে গড় তাপমাত্রা হল ২২ ° সে (৭১.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট)।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "City of zagreb 2006"। City of Zagreb, Statistics Department। ১১ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০০৮।
- ↑ "Statistički ljetopis Grada Zagreba 2007" (পিডিএফ) (Croatian and English ভাষায়)। ২০১৩। আইএসএসএন 1330-3678। ৩ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০০৮।
- ↑ "City Population"।
- ↑ "Grad Zagreb Population"। Population.City (ইংরেজি ভাষায়)। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬। ২৯ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৭।
- ↑ https://hdi.globaldatalab.org/areadata/shdi/
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;2018 pop est
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ "Zagreb Urban Agglomeration Development Strategy for the period up to 2020" (পিডিএফ)। www.zagreb.hr। এপ্রিল ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯।