পাঘমান
পাঘমান پغمان | |
---|---|
শহর | |
কাবুল প্রদেশে অবস্থান | |
দেশ | আফগানিস্তান |
প্রদেশ | কাবুল প্রদেশ |
আয়তন | |
• মোট | ৬০০ বর্গকিমি (২০০ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ২,৩০৭ মিটার (৭,৫৬৯ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১৫) | |
• মোট | ১,৪৩,০০০ |
• জনঘনত্ব | ২৪০/বর্গকিমি (৬২০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | AST (ইউটিসি+০৪:৩০) |
পাঘমান (পশতু/ফার্সি: پغمان) আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের কাছে একটি পাহাড়ী শহর। এটি পাঘমান জেলার মূলকেন্দ্র (কাবুল প্রদেশের পশ্চিম অংশে) যার জনসংখ্যা প্রায় ১,২০,০০০ (২০০২ সালের ইউএনএইচসিআর অনুযায়ী)। শহরটিতে প্রধানত পশতুন ও তাজিক জনগোষ্ঠী বেশি দেখা যায়। পাঘমানের বাগানগুলো খুবই চিত্তাকর্ষক এবং তাই শহরটি আফগানিস্তানের বাগান রাজধানী হিসেবে পরিচিত।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৯২৮ সালে রাজা আমানুল্লাহ খান এবং রাণী সোরায়া তারজির ইউরোপ থেকে ফিরে আসার পর, আমানউল্লাহ বিদেশি বিশেষজ্ঞদেরকে কাবুলের পুনর্নির্মাণের জন্য নিয়ে আফগানিস্তানে এলেন। সেই সময়ে, পাঘমানের প্রবেশপথে, ইউরোপীয় শৈলীতে তারা ফ্রান্সের প্যারিসে আর্ক দে ট্রাইমফের আদলে একটি স্মারক গেট তৈরি করেন, যা আর্চ অফ ভিক্টরি (ফার্সি: طاق ظفر তাক-ই জাফর) নামে পরিচিত ছিল। মূলত হিন্দু কুশের নিচে একটি ছোট গ্রাম, পাঘমান অবকাশ কাটানোর একটি চমৎকার স্থানে পরিণত হয় এর চমকপ্রদ ভিলা এবং চ্যালেটের জন্য। পাশাপাশি গ্রীষ্মকালীন রাজধানী হিসেবে পাঘমানের গুরুত্ব অনেক বৃদ্ধি পায়। শহরের প্রশস্ত পথ জুড়ে ফার, পপলার ও বাদাম গাছের সারির ফাঁকে ফাঁকে ভিলা ও গলফ্ খেলার মাঠ রয়েছে যা শহরের সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। শহরটি ধনী এবং অভিজাতদের অবকাশ কাটানোর জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান ছিল। ধীরে ধীরে বাগানটি স্থানীয় ও বিদেশী পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান হয়ে ওঠে। ধনী কাবুলাইটরা গ্রীষ্মকালীন অবকাশের জন্য এখানে ঘর কিনে রাখত এবং চাকর ও দাসী নিযুক্ত করত।
১৯৮০-র দশকে সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের সময়, পাঘমান একটি বড় যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে পরিণত হয়। সেসময় শহরটি সোভিয়েত সমর্থিত সরকার এবং মুজাহিদীন বিদ্রোহীরা উভয় পক্ষ থেকে বোমা বিস্ফোরণের শিকার হয়েছিল। বেশিরভাগ ভবন ধ্বংস হয়ে যায় এবং বাসিন্দারা পালিয়ে যায়। আর্ক দে ট্রাইমফসহ অল্প কিছু স্থাপত্য টিকে যায়। তবে এই গেটের শীর্ষ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
কারজাই প্রশাসন গঠনের পর, ২০০৩ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত আর্ক দে ট্রাইমফটি পুনর্নির্মিত করা হয়েছিল এবং পূর্ব উদ্যানগুলোর অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুনর্নির্মিত করা হয়েছিল। পাঘমান আবারও জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে ওঠে এবং এটি কাবুলের অধিবাসীদের কাছে খুব প্রিয় একটি স্থান। ২০১০-এর দশকে শহরটির আরও উন্নয়ন করা হয়।
ভৌগোলিক অবস্থান
[সম্পাদনা]হিন্দু কুশ পর্বতমালার পাদদেশে অবস্থিত পাঘমান এই অঞ্চলের অন্যান্য অংশের তুলনায় অধিকতর সবুজ এবং এছাড়াও প্রচুর পরিমাণ ফলের গাছের জন্যও শহরটির খ্যাতি রয়েছে। এই জেলার অন্যান্য গ্রামগুলো হল আদম খেল কাল, হাতাম কালা, সেনো কাল, মুল্লা খেল কালা, মুহাব্বাত খান কাল, লাচি খেল কাল, এবং পাজাক তাপ্পা।
অর্থনীতি
[সম্পাদনা]কৃষি, শ্রম কাজ, পশুপালন ও কাবুলে চাকরি করা হলো এই শহরের আয়ের প্রধান উৎস।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
[সম্পাদনা]- রাজা আমানউল্লাহ খান - সংস্কারবাদী হিসেবে পরিচিত, আমানউল্লাহ খান ১৯১৯ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান শাসন করেছিলেন।
- রাষ্ট্রপতি হাফিজুল্লাহ আমিন - হাফিজুল্লাহ আমিন আফগানিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ছিলেন।
- আব্দুল্লাহ ওয়ারদাক, লগার প্রদেশের প্রয়াত গভর্নর, সেপ্টেম্বরে, ২০০৮ পাঘমানের কাছে গাড়িবহরে উপর তালেবান হামলায় নিহত হন।