দাঁত
দাঁত | |
---|---|
শনাক্তকারী | |
মে-এসএইচ | D014070 |
এফএমএ | FMA:12516 |
শারীরস্থান পরিভাষা |
দাঁত মেরুদণ্ডী প্রাণীদের মুখে অবস্থিত একটি অঙ্গ। এটি খাদ্য চর্বণ ও কর্তনের (কাটা) কাজে ব্যবহৃত হয়। অধিকাংশ প্রাণীর দেহে দাঁতই হচ্ছে কঠিনতম অঙ্গ।
দাঁতের প্রকারভেদ
[সম্পাদনা]- কর্তন দাঁত: একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মাড়ির দাঁতে ৮টি কর্তন দাঁত থাকে, যা খাদ্যকে কাটতে ব্যবহৃত হয়৷
- ছেদন দাঁত: একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মাড়ির দাঁতে ৪টি ছেদন দাঁত থাকে। ছেদন দাঁত খাদ্যকে ছিড়তে ব্যবহৃত হয়৷
- অগ্রপেষণ দাঁত: একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মাড়ির দাঁতে ৮টি অগ্রপেষণ দাঁত থাকে, যা পেষণ এবং চর্বণে ব্যবহৃত হয়৷
- পেষণ দাঁত: প্রাপ্তবয়স্কদের ৮টি পেষণ দাঁত থাকে, যা খাদ্যবস্তু চর্বণ এবং পেষণ করে।
- আক্কেল দাঁত: মাড়ির পেছনে অবস্থিত, এর সংখ্যা ০-৪টি। [১]
দাঁতের অংশ
[সম্পাদনা]- মুকুট : এটি দাঁতের সেই অংশ যা মাড়ির ওপরে থাকে এবং আমরা দেখতে পাই।
- মূল: এটি দাঁতের সেই অংশ যা মাড়ি এবং হাড় দিয়ে আবৃত থাকে। দাঁতের শিকড়ের সংখ্যা এক থেকে চার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
দাঁতের মুকুট ও মূলের সংযোগস্থলকে গ্রীবা বলা হয়। এটিও সাধারণত মাড়ি দিয়ে আবৃত থাকে।
দাঁতে উপস্থিত কলাসমূহ
[সম্পাদনা]- এনামেল: এটি দাঁতের বাইরের শক্ত আবরণ, যা ক্যালসিয়াম ফসফেট, ক্যালসিয়াম কার্বনেট এবং ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড দ্বারা গঠিত।[১]
- ডেন্টিন: এটি ভিতরের স্তর, যা দাঁতের অধিকাংশ স্থান জুড়ে বিদ্যমান।
- দন্তমজ্জা: এটি দাঁতের ভিতরের অংশ। এখানে স্নায়ু ও রক্তবাহী নালিকা বিদ্যমান।
- সিমেন্ট: এটি দাঁতের মূলের চারিদিকে অবস্থিত পাতলা স্তর। এটি এক ধরনের অস্থিসদৃশ আবরণ, যা দাঁতকে চোয়ালের সাথে সংযুক্ত করে রাখে।
এছাড়াও, দাঁতের সিমেন্ট ও চোয়ালের মাঝখানে যে সূক্ষ ফাঁকা থাকে, সেখানে অগণিত অতিসূক্ষ তন্তুসদৃশ লিগামেন্ট থাকে যাকে পেরিওডন্টাল টিস্যু বলে। দাঁতকে হাড়ের সাথে সংযুক্ত রাখাই এর প্রধান কাজ।
দাঁতের যত্ন
[সম্পাদনা]
মুখের সুস্থতা অনেকাংশেই মুখ পরিষ্কার রাখা সংক্রান্ত নিয়মিত চর্চার উপর নির্ভর করে। মুখ পরিষ্কার রাখার ফলে দাঁতের ক্ষয়রোগ, গিংগিভিটিজ, পিরিওডন্টাল রোগ, হ্যালিটোসিস বা মুখের দুর্গন্ধ এবং অন্যান্য দন্তজনিত সমস্যা থেকে ব্যক্তি রক্ষা পায়। পেশাদারী এবং ব্যক্তিগত - উভয় পর্যায়েই এ ধরনের সচেতনতা প্রয়োজন। সচেতনভাবে দাঁত ব্রাশ করার পাশাপাশি নিয়মিত দন্তচিকিৎসকের মাধ্যমে দাঁত পরিষ্কার করলে দাঁতের ক্যালকুলাস বা টারটার এবং দাঁতে অবস্থানরত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূরীভূত হয়। পেশাদারীভাবে দাঁতের পরিষ্কারের জন্য টুথ স্কেলিং করা হয়। এ পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতির প্রয়োগ দেখা যায়।
দাঁত পরিষ্কার রাখার উদ্দেশ্যই হচ্ছে দাঁতের আবরণে ও ফাঁকা জায়গায় অবস্থানরত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে দূরে রাখা।[২]
স্বাস্থ্যপরিচর্যা বিষয়ক ব্যক্তিত্ব হিসেবে দন্তচিকিৎসকগণ পরামর্শ দেন যে,
- প্রতিদিন খাদ্য গ্রহণের পর সকালে কিংবা রাতে দু'বার নিয়মিতভাবে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। এর ফলে দাঁতের গঠন সুন্দর এবং মজবুত হবে ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে।[৩]
- প্রতি তিন মাস অন্তর টুথব্রাশ পরিবর্তন করতে হবে। সম্ভব হলে এর আগেই টুথব্রাশ পরিবর্তন করা যেতে পারে।
- প্রতি ছয় মাস পরপর দন্তচিকিৎসকের সুপারিশ গ্রহণ করতে হবে।
- ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট বা মাউথওয়াশ ব্যবহার করা উচিত, যা দাঁতকে আরো সুরক্ষা করবে।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ নবম-দশম শ্রেণী, জীববিজ্ঞান (২০২০)। খাদ্য ও পুষ্টি। NCTB। পৃষ্ঠা ১১১–১১২।
- ↑ "Introduction to Dental Plaque"। ২৪ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০১১।
- ↑ Oral Health Topics: Cleaning your teeth and gums ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩১ আগস্ট ২০০৯ তারিখে. Hosted on the American Dental Association website. Page accessed August 15, 2006.